হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, মুয়াবিয়া খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিল—যদি আমিরুল মুমিনীন ইমাম আলী (আ.) রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন, তবে তার নিজের জন্য আর কোনো স্থান অবশিষ্ট থাকবে না। এই আশঙ্কা থেকেই সে নিজেকে খলিফা উসমানের “উত্তরাধিকারী” বলে দাবি করতে শুরু করে। মূলত এই দাবির আড়ালেই লুকিয়ে ছিল তার ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও ক্ষমতালিপ্সা।
সিফফিন যুদ্ধের মূল কারণ ছিল এই স্বার্থপর প্রবণতা। মুয়াবিয়ার ধারণা ছিল—ইমাম আলী (আ.) যদি ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হন, তবে তাঁর প্রশাসনে মুয়াবিয়ার কোনো গুরুত্ব বা কর্তৃত্ব থাকবে না। ঠিক যেমন তালহা ও যুবাইর অনুভব করেছিলেন যে, তারা আলীর সরকারের অধীনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন না—তাই তারা মক্কায় গিয়ে সেনা সংগ্রহ করে জামাল যুদ্ধ সৃষ্টি করেছিল—মুয়াবিয়ার অবস্থানও ছিল তেমনই।
মুয়াবিয়া নিজেকে উসমানের ‘রক্তের প্রতিশোধ’-এর দাবিদার দেখিয়ে বলত: “উসমানকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে; আমি তার চাচাতো ভাই, আমাকেই তার রক্তের প্রতিশোধ নিতে হবে। আলী কেন উসমান হত্যাকারীদের শাস্তি দিচ্ছেন না?”
কিন্তু প্রশ্ন হলো, যখন পরে সরকার তোমার (মুয়াবিয়ার) হাতেই চলে এলো, তখন তুমি কেন উসমানের হত্যাকারীদের শাস্তি দিলে না?
যার জন্য তুমি আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের পতাকা তুলেছিলে, সেই দাবিরই তুমি বাস্তবায়ন করোনি। উসমানের হত্যাকারীদের মধ্যে ক’জনকে তুমি শাস্তি দিয়েছ?
বরং উল্টো তুমি শাস্তি দিয়েছ ইমাম আলীর বিশ্বস্ত সাহাবিদের—
হুজর ইবনে আদী, আম্মার ইবনে ইয়াসির, মিসাম তাম্মার—এদের মতো বহু নিরপরাধ ও বিশুদ্ধ সাহাবিকে হত্যা করেছ। উসমানের হত্যাকারীদের শাস্তি দেওয়া তো দূরের কথা—তুমি বরং আলীর আনুগত্যশীল লোকদেরই দমন-নিপীড়নের আওতায় এনেছ।
অতএব সিফফিন যুদ্ধের অন্তরালে মূল বিষয়টি ছিল—
মুয়াবিয়ার কামনা-বাসনা, ক্ষমতালিপ্সা ও ব্যক্তিগত স্বার্থ,
যাদের সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে, “ওহে অভিশপ্ত বৃক্ষ” — الشجرة الملعونة فی القرآن
আপনার কমেন্ট